চবির বনবিদ্যা ও পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের গ্রীণ ওয়েভ ইনিশিয়েটিভ



চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বনবিদ্যা ও পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে কৌশলগত বৃক্ষ রোপণের মাধ্যমে আগামি ৭ জুলাই থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত দেশব্যাপী "সবুজ তরঙ্গ" তৈরির পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সঠিক জায়গায় সঠিক গাছ লাগানোর মাধ্যমে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এই ক্যাম্পেইন হতে পারে একটি শক্তিশালী মাধ্যম।

এই কর্মসূচির আওতায়দেশব্যাপী প্রতিনিধিদল নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী পুরো বাংলাদেশে একযোগে বৃক্ষরোপণ করা হবে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ইতিবাচক অবদান রাখতেতাদের এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে সকলের সার্বিক অংশগ্রহণ ও সমর্থন নিশ্চিত করতে কাজ করছে তারা। তারই ধারাবাকিতায়তারা তরুণ প্রজন্মকে পরিবেশবান্ধব ও বৈজ্ঞানিক উপায়ে গাছ লাগানোর কলাকৌশল সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেবে। পাশাপাশিসারাদেশের একযোগে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পরিবেশের জন্য উপকারী গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রতিনিধি দলটি। তাদের এই উদ্যোগে যুক্ত হতে পারবে স্কুলকলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এই ক্যাম্পেইন তরুণদেরকে পরিবেশ এবং দেশকে নিয়ে ভাবতে শিখাবেসৃষ্টি করবে পরিবেশ নিয়ে কাজ করার আগ্রহ।

তাপদাহের কারণে এ বছর গাছ লাগানো একটা সোশ্যাল ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। কিন্তু যত্রতত্র গাছ লাগানো ঠিক নয়কখনোও বা আবার স্থানীয় পরিবেশের বিবেচনায় বিশেষ কোনো গাছ ক্ষতিকরও হতে পারে। অপরিকল্পিত ভাবে,  দ্রুত বর্ধনশীল গাছ লাগিয়ে সাময়িক স্বস্তি লাভ করা গেলেওভবিষ্যতে সেটা ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। তাছাড়াও অসময়ে এবং অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গাছ লাগানোর কারণে ক্রমশই কমে আসছে গাছগুলোর বেঁচে থাকার হার।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব দিন দিন তীব্রতর হচ্ছে। তীব্র গরমের প্রভাবে ব্যাহত হচ্ছে জীবনযাত্রানষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। বিপরীতেগাছ পরিবেশকে শীতল রাখেগ্রীষ্মের দাবদাহে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে গাছপালা রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। বায়ু দূষণ রোধে গাছপালা অপরিহার্য। গাছের পাতা মাটিতে মিশে মাটির উর্বরতা বাড়ায়বৃষ্টিপাত বৃদ্ধিতে রাখে অসামান্য অবদান। গাছ বিভিন্ন প্রাণীর আবাসস্থলপ্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য রক্ষায়ও গাছপালার রয়েছে নানাবিধ প্রয়োজনতা। পরিবেশবান্ধব উপায়ে গাছ লাগালে পরিবেশের উপর চাপ কমে এবং পাওয়া যায় দীর্ঘমেয়াদী সুফল।

পরিবেশ রক্ষায় গাছ লাগানো একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। শুধুমাত্র সরকার বা সংস্থাগুলোই নয়সকল মানুষের উচিত পরিবেশ রক্ষার জন্য গাছ লাগানো। স্কুলকলেজপ্রতিষ্ঠানবাড়ির আঙ্গিনায়রাস্তার পাশেখোলা জায়গায় গাছ লাগানো যেতে পারে। গাছ লাগানোর মাধ্যমে আমরা পরিবেশকে শীতল রাখতে পারিকমিয়ে আনতে পারি পরিবেশ দূষণ। বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে পারি এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য প্রস্তুত করতে পারি একটি সুন্দর ও বাসযোগ্য পৃথিবী।

গাছপালা মানুষের মনে প্রশান্তি ও আনন্দ জাগিয়ে তোলে। স্থানীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সাথে জড়িত এই গাছ লাগানোর মাধ্যমে বৃদ্ধি পায় পারস্পারিক সহমর্মিতাশক্তিশালী হয় ভ্রাতৃত্ববোধ। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সামনের গ্রীষ্মকালগুলো আমাদের জন্য আরো কঠিন হবে। সঠিক পদক্ষেপ নেবার এখনই সময়। আসুনসবাই একসাথে সঠিক ভাবেসঠিক স্থানেসঠিক গাছ লাগাই। নিজেরা বাঁচিবাঁচাই আগামীর পৃথিবী।

 

মো. রাফছান

শিক্ষার্থীচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

লেখক Md. Rafsan

মো. রাফছান একজন লেখক, কলামিস্ট, সংগঠক ও গ্রাফিক্স ডিজাইনার। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্স-এর শিক্ষার্থী এবং তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, চবি-র প্রতিষ্ঠাতা ও উপদেষ্টা। সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে তরুণদের সঙ্গে কাজ করছেন। সঠিক তথ্য, সচেতনতা এবং সহযোগিতার মাধ্যমে একটি সমতা ও মানবিকতা-ভিত্তিক সমাজ গড়াই তাঁর মূল উদ্দেশ্য।

0 Comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন