সেশনজট কমাতে শিক্ষার্থীবান্ধব নীতিমালা প্রয়োজন




দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েও বছরের পর বছর একই ক্লাসে থেকে যাওয়ার যে গ্লানি, যে কষ্ট, তার কতটুকু বুঝেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশন, কতটুকু অনুভব করে সমাজ কিংবা রাষ্ট্র? শুধুমাত্র কয়েকটা পরিক্ষার জন্য দিনের পর দিন একটু একটু করে পিছিয়ে যাচ্ছে আমাদের শিক্ষার্থীরা। সেশনজটের কারণেই, শিক্ষার্থীরা সব ধরনের চাকুরি পরিক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ হারাচ্ছে, একটু একটু করে ফুরিয়ে আসছে তাদের চাকুরির বয়স। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সময়মত পরিক্ষা নিতে না পারার ব্যর্থতার বলি হচ্ছে শত শত শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসাশনগুলোর এই অতৎপরতা এবং উদাসীনতার বেড়াজালে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে অসংখ্য শিক্ষার্থীর জীবন। অথচ, করোনার কারণে সৃষ্ট সেশনজট কমাতে স্কুল, কলেজগুলোতে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীদের অটো পাশ দিয়েছে শিক্ষা অধিদপ্তর। বিপরীতে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলছে পরিক্ষার নামে ছাত্রদের সামনে মুলা ঝোলানোর এক অসুস্থ প্রতিযোগিতা। একবিংশ শতাব্দীর এই আধুনিক যুগে সেশনজট কোনো ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। অন্তত গত দেড় বছরের ক্ষতটা কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে অটো কিংবা এসাইন্মেন্ট যেভাবেই হোক, প্রমোশনটা খুব করে দরকার শিক্ষার্থীদের। করোনার কারণে তৈরী হওয়া দীর্ঘ সেশনজটের ফলে সৃষ্ট মানষিক অস্থিরতা দূরীকরণে প্রয়োজনে এসাইন্মেন্টের মাধ্যমে হলেও শিক্ষার্থীদের পরিক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের নীতিগত সিদ্ধান্তে আসতে হবে। করোনা ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজস্ব কারণে সৃষ্টি হওয়া সেশনজট কমাতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপর নজরদারি বাড়াতে হবে। সেশনজট কমাতে অনতিবিলম্বে শিক্ষার্থীবান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন এবং তার যথাযথ বাস্তবায়ন করা গেলে অচিরেই সেশনজটের মত ভয়াবহ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার পাশাপাশি পরিক্ষা-পরিক্ষা নামের এই বেরসিক খেলা থেকে রেহাই পাবে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংখ্য শিক্ষার্থী।

মোঃ রাফছান
শিক্ষার্থী, মেরিন সায়েন্স, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

লেখক Md. Rafsan

মো. রাফছান একজন লেখক, কলামিস্ট, সংগঠক ও গ্রাফিক্স ডিজাইনার। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্স-এর শিক্ষার্থী এবং তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, চবি-র প্রতিষ্ঠাতা ও উপদেষ্টা। সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে তরুণদের সঙ্গে কাজ করছেন। সঠিক তথ্য, সচেতনতা এবং সহযোগিতার মাধ্যমে একটি সমতা ও মানবিকতা-ভিত্তিক সমাজ গড়াই তাঁর মূল উদ্দেশ্য।

0 Comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন