শিশুর সুষ্ঠ সামাজিকীকরণে অভিভাবকদেরকেই দ্বায়িত্ব নিতে হবে




একটা টিকটকার প্রজন্ম বড় হয়ে ওঠছে। আদতে তারা হাসি-তামাশা, হৈ-হুল্লোড় ছাড়া আর কিছু জানেই না। মেধা থাকা স্বত্বেও হাসি-ঠাট্টার আঁড়ালে আজকাল ব্যপথেই ব্যবহৃত হচ্ছে তাদের মস্তিষ্ক, সময়োপযোগী একটা সঠিক সিদ্ধান্তের অভাবে অকালেই নিভে যাচ্ছে প্রয়োজনীয় কার্যকর এই লাখো কোটি প্রতিভা। যেখানে একদল টিকটকার সামান্য বিষয় নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করছে, আরেকদল মানুষ সেই হাস্যকর বিষয়গুলোই প্রমোট করছে, প্রমোট করছে সেইসব টিকটকারদেরও। ছলে, বলে, কৌশলে, ইচ্ছা-অনিচ্ছায় আমাদের তরুণ প্রজন্মের অবাধে আজকের এই টিকটকার হয়ে যাওয়া আমাদের পুরো জাতিকে একদিন ভীষণভাবে পুড়াবে।

দিনে দিনে পশ্চিমাদের সস্তা প্রযুক্তি আর অপ্রয়োজনীয় বিলাসিতায় পুরো জাতি যেভাবে দিন কে দিন মেধাশূণ্য হচ্ছে, যেভাবে হাস্যকর বিষয়গুলো হয়ে ওঠছে আমাদের নিত্যদিনকার চিন্তাভাবনার খোরাক, এভাবে চলতে থাকলে আমাদের জন্য খুবই আশঙ্কাজনক একটা অন্ধকার ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে। হ্যাঁ, তখন আর ফেরার পথ থাকবে না। সেদিন দেউলিয়া হতে হবে মেধায়, চিন্তায়, নিজস্য সংস্কৃতি আর বুদ্ধিবৃত্তিক জ্ঞানচর্চায়। তাই সময় থাকতেই এসবের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষকে কঠোর সিদ্ধান্তে আসতে হবে। সঠিক কাউন্সিলিং, বুদ্ধিবৃত্তিক জ্ঞানচর্চা কিংবা দেশীয় সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে ফিরিয়ে আনতে হবে শতভাগ বাঙালীয়ানা বৈশিষ্ট্য।

সর্বস্তরে শিক্ষার মান উন্নয়ন ও শতভাগ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি দেশের দক্ষ, মেধাবী, সুশীল সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। দেশীয় সংস্কৃতি রক্ষায় অনতিবিলম্বেই বন্ধ করতে হবে মিডিয়াগুলোর অপ্রয়োজনীয় ক্ষতিকর ফেসবুক কিংবা ইউটিউবের রমরমা ভিডিও ব্যবসা। অদরকারি খাতে ইন্টারনেটকে কঠিন করে দিয়ে হ্রাস করতে হবে অপ্রয়োজনীয় প্রসার-প্রচারণা। সঠিক সামাজিকীকরণের মাধ্যমে সন্তানের পূর্ণ মানসিক বিকাশে অভিভাবকদেরই সর্বপ্রথম দ্বায়িত্ব নিতে হবে। শিশুর বড় হয়ে ওঠার প্রতিটা পর্যায়ে ঠিক করে দিতে হতে তার ব্যবহার, চলাফেরা, পড়ালেখা জ্ঞান আহরণ থেকে তার নিত্যদিনকার কাজকর্মও। তবেই সুদিন ফিরবে, বিপরীতে আমরা পাব একটা স্বশিক্ষিত মেধাবী প্রজন্ম।

 

মোঃ রাফছান

শিক্ষার্থী, মেরিন সায়েন্স, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।



লেখক Md. Rafsan

মো. রাফছান একজন লেখক, কলামিস্ট, সংগঠক ও গ্রাফিক্স ডিজাইনার। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্স-এর শিক্ষার্থী এবং তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, চবি-র প্রতিষ্ঠাতা ও উপদেষ্টা। সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে তরুণদের সঙ্গে কাজ করছেন। সঠিক তথ্য, সচেতনতা এবং সহযোগিতার মাধ্যমে একটি সমতা ও মানবিকতা-ভিত্তিক সমাজ গড়াই তাঁর মূল উদ্দেশ্য।

0 Comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন