পুরাতন টিনের ছাওনিতে জড়সড় ছোট্ট কুঁড়েঘর। বাপ, মেয়ে দুইজনের টানাপোড়নের বড্ড অভাবের সংসার। বিষাদময় অতীত, বর্তমান নেই, নেই প্রত্যাশিত কোনো ভভিষ্যতও।
দিন চলে যায় সময়ের নিয়মে, ভুখে-অভুখে পার হয় মা হারা জমিলার এক একটা স্বার্থপর জোছনার রাত। চাঁদের সাথে গল্প করার বয়স নেই, শৈশব নেই, ঠিকানা নেই। কেমন একপেশে অবহেলিত বিরহের জীবন। যেন অকারনেই বেঁচে থাকা, অনিচ্ছায় পাওয়া সময়ের আরও একটু অপচয়।
জামিলার এই বর্ণহীন জীবনে সুখ আসেনি, আনন্দ কখনওই ঘেরাও করেনি ভেতরবাড়ি। তার জীবনের প্রতিটি স্তরে থরেবিথরে এঁটে আছে শক্তিশালী দুঃখ শৃঙ্খল। পয়া-অপয়ার বিবাদে অনন্ত পুড়ে এখন বিদায়ের ক্ষণ গুনছে সে।
জীবনের পড়ন্ত বয়সে বকলম রফিক মিয়া, মেয়ে নিয়ে অবিরাম সাঁতরে চলেছে দুঃখ দরিয়া। কাজ কর্মের বালাই নেই, আচমকাই মিলে দুমুঠা ভাতের খোঁজ। সময়-অসময়ে তার এই দুর্বল হাতে যোগ হয় নানা রকম কর্মশৈলী।
তার দুর্বল, বয়স্ক হাতে গড়ে ওঠে দালান, রিকশা-ভ্যানগুলো এগিয়ে চলে ভোঁভোঁ করে। কখনোবা মাথায় চড়ে বসে টিন, কাঠ কিংবা প্লাস্টিকের ছোট-বড় বস্তা। দিনশেষে তাদের জীবন হয়তো বেঁচে যায় ঠিকই!
কিন্তু, এ বেঁচে থাকায় কোনো আশা নেই, মোহ নেই, কোনো প্রাপ্তি নেই। তবুও কি এক অদ্ভুদ ইচ্ছে, হাজার মৃত্যু পরিক্ষার পরেও তাদের বাঁচিয়ে রাখে। এক অফুরান দীর্ঘশ্বাস বুকে নিয়ে তারা বেঁচে থাকে নির্বাক, বোকাপাখি হয়ে।
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন